খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুন - ২০২৪

সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে খেজুর খাওয়ার কোন বিকল্প নেই। আমাদের শরীরের জন্য খেজুরের উপকারিতার শেষ নেই। একটি খেজুরে প্রায় ৮০% চিনি জাতীয় উপাদান এবং বাকি ২০% খনিজ সমৃদ্ধ বোরন, কোবাল্ট, ফ্লুরিন, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, সেলেনিয়াম এবং জিঙ্কের মত স্বাস্থ্যকর উপাদান রয়েছে। যা আমাদের শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, উচ্চ রক্তচাপ কমায়, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, হজম প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। এছাড়াও আরও হাজারও উপকার রয়েছে খেজুরে। 


খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুন


খেজুর ফ্রুকটোজ ও গ্লাইসেমিক সমৃদ্ধ একটি ফল। যা আমাদের শরীরের নানাবিধ উপকারে আসে। আমাদের শরীরের রক্তের শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। যাদের ডায়েবেটিক্স এর সমস্যা আছে তাদের জন্য খেজুর সব থেকে বেশি উপকারী। তাদের শরীরের এন্টিবায়োটিক এর মত কাজ করে। ছোট বড় সবার জন্যই খেজুরের অনেক উপকারী গুনাগুণ রয়েছে। খেজুরের উপকারিতা ও কিছু অপকারিতা নিয়ে আজকের পোস্টে আলোচনা করবো। 

    খেজুরের পুষ্টিগুণ কি কি?

    খেজুরের পুষ্টি গুণ বলে বা লিখে শেষ করার মত না। শক্তির অনেক বড় একটি উৎস খেজুর। শরীরের ক্লান্তিভাব দূর করা, দুর্বল ভাব দূর করা ছাড়াও অনেক গুনাগুণ রয়েছে খেজুরে। প্রতি ৪ টি বা ৩০ গ্রাম খেজুরের পুষ্টিগুণের হিসাব ৩০ গ্রাম খেজুরে থাকে:

    ● ৯০ ক্যালরি

    ● ১ গ্রাম প্রোটিন 

    ● ১৩ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম 

    ● ২.৮ গ্রাম ফাইবার 

    ● আরও ২০ ধরণের পুষ্টি উপাদান যেমন- কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, প্রোটিন, ভিটামিন বি, ভিটামিন কে, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, জিঙ্ক এবং ম্যাঙ্গানিজ। 


    খেজুরের উপকারিতা 

    খেজুরের নানাবিত উপকারিতা সম্পর্কে আমরা কমে বেশী অবগত। নিচে আমরা খেজুরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিব। চলুন তাহলে জেনে নেই খেজুরের উপকারিতা গুলো কি কি? 

    কোষ্ঠকাঠিন্য

    প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। এটা আমাদের শরীরের জন্য অনেক ভালো। 

    হার্ট ভালো রাখে 

    খেজুরে থাকা কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, প্রোটিন, ভিটামিন বি মানুষের হার্ট ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে। 

    কোলেস্টেরল 

    খেজুরের বিশেষ কিছু উপাদান আমাদের হার্ট ভালো রাখতে সহযোগিতা করে।

    হাড় 

    হাড়ের শক্তি যোগায় এবং শিশুদের দৈহিক গঠন বৃদ্ধি করতে ভালো অবদান রাখে। 

    রক্তচাপ 

    রক্তের সুগার ও কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমিয়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। 

    যৌন শক্তি বাড়ায়

    নারী ও পুরুষ উভয়েরই এই ধরণের দুর্বলতা দূর করে। নিয়মিত ২ টা খেজুর খেলেই এমন সমস্যা দূর করা সম্ভব। 

    বুদ্ধি

    মস্তিষ্কের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে, ফলে বুদ্ধি বাড়ে। 

    রক্তাল্পতা

    শরীরের রক্তাল্পতা সমস্যার সমাধান করে। অনেক সময় দেখা যায় শিশুদের শরীরে রক্ত সল্পতা দেখা দেয়। নিয়মিত খেজুর খেলে এই সমস্যা খুব দ্রুত সমাধান হয়। 

    ওজন বৃদ্ধি 

    ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে ভালো ভুমিকা রাখে। যাদের শরীরের ওজন তাদের ওজন বাড়ায় আবার যাদের শরীরের ওজন বেশি তাদের শরীরের ওজন কমায়। 

    সুস্থ গর্ভাবস্থা 

    গর্ভবতী নারীদের জন্য খুব উপকারী। রক্ত শূন্যটা দূর করে, শরীরের ক্লান্তি দূর করে পেটের বাচ্চাকে সুস্থ রাখে। 

    ত্বক এবং চুল 

    নিয়মিত ৪ টা করে খেজুর আপনার ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। 

    খেজুরের অপকারিতা 


    যে কোন পুষ্টিকর খাবারেরই কিছু না কিছু অপকারিতা থাকে। খেজুরের ক্ষেত্রে সেটা খুবই কম। 

    ১। অতিরিক্ত মাত্রায় খেজুর খেলে যাদের ওজন বেশি তাদের ওজন আরও বেড়ে যায়। 

    ২। বেশি খেজুর খেলে কিডনিতে খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ খেজুরে পটাসিয়াম থাকে যা কিডনির জন্য ক্ষতিকর।

    ৩। এছাড়াও বদ হজম, পেটে গ্যাস এর মত ছোট ছোট সমস্যা হতে পারে। তবে সেটা সবার ক্ষেত্রে না আবার কম খেলে এমন সমস্যা হবে না। শুধু ,মাত্র অতিরিক্ত খেলে এমন হবে। 

    এক কথায় বলতে গেলে মরণ ছাড়া প্রায় সব রোগের ওষুধ এই খেজুর। শরীরের পা থেকে মাথা পর্যন্ত সব অঙ্গের জন্য খেজুরের উপকারিতা অনেক। ছোট বড়, নারী পুরুষ, বৃদ্ধ সবার জন্যই মহা ওষুধ হিসেবে কাজ করে। আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকার খেজুর থাকা খুব জরুরি। 

    আশা করি, এই পোস্টের মাধ্যমে আপনাদের খেজুরের উপকারিতা সম্পর্কে কিছুটা হলেও জানাতে পেরেছি। যদি ভালো লাগে অবশ্যই আমাদের ওয়েব সাইট টি ভিসিট করুন। 

    বহুল জিজ্ঞেসিত প্রশ্নাবলী 


    সকালে খালি পেটে খেজুর খেলে কি হয়?

    উত্তরঃ সকালে ২ থেকে ৩ টা, এবং রাতে ২ থেকে ৩ টা। তবে এর বেশি অবশ্যই না।

    খেজুরে চিনি খাওয়া কি ক্ষতিকর?

    উত্তরঃ খেজুরের ক্ষতিকর দিক খুব কম। বেশি খাওয়া যাবে না এতে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে।

    খেজুরে কি কি ভিটামিন আছে?

    উত্তরঃ ভিটামিন এ, থায়ামিন (বি১), রিবোফ্লাভিন (বি২), নায়াসিন (বি৩),প্যানটোথেনিক, অ্যাসিড (বি৫), ভিটামিন বি৬, ফোলেট (বি৯), ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ভিটামিন কে থাকে।

    খেজুর সুপারফুড কেন?

    উত্তরঃ প্রায় সব ধরণের রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা আছে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    0 মন্তব্যসমূহ
    * Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.